Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানী প্রতিরোধে হাইকোর্ট ডিরেক্টিভস ২০০৯
বিস্তারিত

যৌন হয়রানীমুক্ত শিক্ষা ও কর্মপরিবেশ তৈরিতে মহামান্য হাইকোর্ট প্রদত্ত নীতিমালার প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন জরুরী

নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকল জনগণের অধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশ সংবিধানের প্রায় সকল অনুচ্ছেদেই জনগণের সমান অধিকার ভোগের নিশ্চয়তার কথা বলা হয়েছে। যেমন: সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে জনগণের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার, ১৫ অনুচ্ছেদে সামাজিক নিরাপত্তাসহ মৌলিক প্রয়োজন, ১৯ (১) অনুচ্ছেদে সুযোগের সমতা, ২৮ (২) অনুচ্ছেদে সমান অধিকার, ৩২ অনুচ্ছেদে জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার, ৩৬ অনুচ্ছেদে চলাফেরার স্বাধীনতার অধিকার, ৩৯ অনুচ্ছেদে চিন্তা, বিবেক ও বাক স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ (সিডও) সনদের ১০ অনুচ্ছেদে শিক্ষা ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমান অধিকার, ১১ অনুচ্ছেদে কর্মসংস্থানের অধিকার, পেশা বা চাকুরী বেছে নেয়ার অধিকার, পদোন্নতি, চাকুরীর নিরাপত্তাসহ বৈষম্যহীনভাবে সকল সুবিধা ভোগের অধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে। এ সনদে স্বীকৃত অধিকার সমূহের পূর্ণ বাস্তবায়ন অর্জনের লক্ষ্যে অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ সত্বেও নারীর প্রতি বৈষম্যকে প্রকটতর করা এবং নারী উন্নয়নকে ঠেকিয়ে রাখার প্রক্রিয়া হিসেবে নানা কৌশলে সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানী বা যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

এ পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রসহ সকল সরকারী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানীর শিকার নারী ও শিশুদের জন্য প্রতিরোধমূলক বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে হাইকোর্টের নির্দেশনা জরুরী বিবেচিত হয়। এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির নির্বাহী পরিচালক এডভোকেট সালমা আলী যৌন হয়রানীমূলক সকল প্রকার নির্যাতন প্রতিরোধে মহামান্য হাইকোর্টের দিকনির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পরিচালনা করেন সমিতির সভাপতি এডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ।

উক্ত মামলার প্রেক্ষিতে ১৪মে, ২০০৯ মহামান্য হাইকোর্টের মহামান্য বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও মহামান্য বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দীকি সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ একটি দিকনির্দেশনামূলক নীতিমালা প্রদান করেন। এ নীতিমালার লক্ষ্য ‍ও উদ্দেশ্য হলো:

ক) যৌন হয়রানী সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা;

খ) যৌন হয়রানীর কুফল সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা;

গ) যৌন হয়রানী শাস্তিযোগ্য অপরাধ;

 

উক্ত নীতিমালা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী (যেখানে সুপ্রীম কোর্ট-এর রায়ের বাধ্যতামূলক কার্যকারিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে) কার্যকর হবে।

মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যতদিন পর্যন্ত এ বিষয়ে উপযুক্ত আইন প্রণয়ন না হবে ততদিন পর্যন্ত সকল সরকারী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রে এই নীতিমালা অনুসরণ এবং পালন করা হবে।

এ নীতিমালার ৩ ধারা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানসমূহে নিয়োগদাতাগণকে যে সকল কর্তব্য পালন করতে হবে তা হলোঃ

-যৌন হয়রানীমূলক সকল প্রকার ঘটনাকে প্রতিরোধ করতে একটি কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা;

-প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ প্রয়োজনে তার প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত যৌন হয়রানীর বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করার জন্য যথাযথ কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা;

নীতিমালার ৪ ধারায় যৌন হয়রানীর সংজ্ঞা বলা হয়েছেঃ

৪(১) যৌন হয়রানী বলতে বুঝায়-

ক) অনাকাঙ্খিত যৌন আবেদনমূলক আচরণ (সরাসরি কিংবা ইঙ্গিতে) যেমন: শারীরিক স্পর্শ বা এ ধরনের প্রচেষ্টা;

খ) প্রাতিষ্ঠানিক এবং পেশাগত ক্ষমতা ব্যবহার করে কারো সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করা;

গ) যৌন হয়রানী বা নিপীড়নমূলক উক্তি;

ঘ) যৌন সুযোগ লাভের জন্য অবৈধ আবেদন;

ঙ) পর্ণোগ্রাফী দেখানো;

চ) যৌন আবেদনমূলক মন্তব্য বা ভঙ্গী;

ছ) অশালীন ভঙ্গী, অশালীন ভাষা বা মন্তব্যের মাধ্যমে উত্ত্যক্ত করা বা অশালীন উদ্দেশ্য পূরণে কোন ব্যক্তির অলক্ষ্যে তার নিকটবর্তী হওয়া বা অনুসরণ করা, যৌন ইঙ্গিতমূলক ভাষা ব্যবহার করে ঠাট্টা বা উপহাস করা;

জ) চিঠি, টেলিফোন, মোবাইল, এসএমএস, ছবি, নোটিশ, কার্টুন, বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল, নোটিশ বোর্ড, অফিস, ফ্যাক্টরি, শ্রেণীকক্ষ, বাথরুমের দেয়ালে যৌন ইঙ্গিতমূলক অপমানজনক কোন কিছু লেখা;

ঝ) ব্লাকমেইল অথবা চরিত্র হননের উদ্দেশ্যে স্থির বা ভিডিও চিত্র ধারণ করা;

ঞ) যৌন হয়রানীর কারণে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক, প্রাতিষ্ঠানিক এবং শিক্ষাগত কার্যক্রমে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হওয়া;

ট) প্রেম নিবেদন করে প্রত্যাখাত হয়ে হুমকী দেয়া বা চাপ প্রয়োগ করা;

ঠ) ভয় দেখিয়ে বা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বা প্রতারণার মাধ্যমে যৌন সম্পর্ক স্থাপন বা স্থাপনে চেষ্টা করা;

ক-ঠ ধারায় উল্লিখিত আচরণসমূহ নারীর স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার জন্য হুমকি স্বরুপ এবং অপমানজনক। কোন নারী যদি এ ধরনের আচরণের শিকার হন এবং যদি তিনি মনে করেন যে, এই বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তার কর্মক্ষেত্র বা শিক্ষাক্ষেত্র বা যেখানে তিনি আছেন সেখানকার পরিবেশ তার উন্নয়নের জন্য বাধা বা প্রতিকূল হতে পারে তাহলে উক্ত আচরণসমূহ নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক বলে বিবেচিত হবে।

৪(২) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলতে বুঝায় যে কোন সরকারী বা বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠন বা কর্মক্ষেত্রের কর্তৃপক্ষ, যিনি প্রতিষ্ঠানের অন্যায় আচরণ দমনে প্রতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা বলবৎ করার ক্ষেত্রে ক্ষমতা রাখেন।

৪(৩) শৃঙ্খলাবিধি বলতে বুঝায় সরকার কর্তৃক প্রণীত আইন বা অধ্যাদেশ বা অধ্যাদেশের আওতাভুক্ত সকল বিধি যা সরকারী বেসরকারী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রণয়ন করা হয়েছে।

ধারা ৫: সচেতনতা এবং জনমত সৃষ্টিঃ

ক) সরকারী-বেসরকারী সকল কর্মক্ষেত্রে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জেন্ডার বৈষম্য, যৌন হয়রানী এবং নির্যাতন দমন এবং নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টিতে নিয়োগদাতা বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সচেতনতামূলক প্রকাশনার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেবেন। এ বিষয়ে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতি শিক্ষাবর্ষের প্রারম্ভে শ্রেণীর কাজ শুরুর পূর্বে শিক্ষার্থীগণকে এবং সকল কর্মক্ষেত্রে মাসিক এবং ষান্মাসিক ওরিয়েন্টেশন ব্যবস্থা রাখতে হবে।

খ) প্রতিষ্ঠান সমূহে প্রয়োজনীয় কাউন্সিলিং ব্যবস্থা থাকতে হবে।

গ) সংবিধানে উল্লিখিত অনুচ্ছেদ এবং সংবিধিবদ্ধ আইনে নারী শিক্ষার্থী এবং কর্মে নিয়োজিত নারীগণের যে অধিকারের বিষয়ে উল্লেখ করা আছে তা সহজভাষায় বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।

ঘ) আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ব্যক্তিগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রের নিয়োগকর্তাগণ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ এবং কার্যকরী মতবিনিময় করবেন।

ঙ) সংবিধানে বর্ণিত জেন্ডার সমতা এবং যৌন অপরাধসমূহ সম্পর্কিত দিকনির্দেশনাটি পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করতে হবে।

চ) সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংবিধানে উল্লিখিত মৌলিক অধিকার সম্পর্কিত নিশ্চয়তাসমূহ প্রচার করতে হবে।

ধারা ৬: প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাঃ

সকল নিয়োগকর্তা এবং কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ যৌন হয়রানী প্রতিরোধের লক্ষ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে অন্যান্য পদক্ষেপ ছাড়াও তারা নিন্মোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

ক) এ নির্দেশনায় উল্লিখিত ৪ ধারা অনুযায়ী যৌন হয়রানী এবং যৌন নির্যাতনের উপর যে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে তা কার্যকরভাবে প্রচার এবং প্রকাশ করা।

খ) যৌন হয়রানী সংক্রান্ত যে সকল আইন রয়েছে এবং আইনে যৌন হয়রানী ও নির্যাতনের জন্য যে সকল শাস্তির উল্লেখ রয়েছে তা ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।

গ) কর্মক্ষেত্রে এবং শিক্ষা ক্ষেত্রের পরিবেশ নারীর প্রতি যেন বৈরী না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে এবং কর্মজীবী নারী ও নারী শিক্ষার্থীগণের মাঝে এ বিশ্বাস ও আস্থা গড়ে তুলতে হবে যে, তারা তাদের পুরুষ সহকর্মী ও সহপাঠীদের তুলনায় অসুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে না।

ধারা ৭: শৃঙ্খলাবিধি কার্যক্রমঃ

এ নির্দেশনায় উল্লিখিত ৪ ধারা অনুযায়ী যৌন হয়রানী এবং যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে যথাযথ শৃঙ্খলাবিধি প্রণয়ন এবং কার্যকর করতে হবে।

ধারা ৮: অভিযোগঃ

যে সকল আচরণ এই গাইড লাইনের অন্তর্ভুক্ত নয় এমন অশোভন আচরণসমূহ সম্পর্কে যদি অপরাধের শিকার নারী অভিযোগ করতে চায় তা গ্রহণ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং তা প্রতিকারের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং এজন্য নিম্নেক্ত বিষয় গুলি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে:

ক) অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিচয় গোপন রাখতে হবে।

খ) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

গ) অপরাধের শিকার নিজে অথবা বন্ধু বা চিঠি বা আইনজীবীর মাধ্যমে লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করতে পারে।

ঘ) অভিযোগকারী ব্যক্তি স্বতন্ত্রভাবে অভিযোগ কমিটির নারী সদস্যের কাছে অভিযোগ জানাতে পারে।

ঙ) অভিযোগ কমিটির কাছে অভিযোগ দায়ের করার জন্য ধারা ৯ অনুসরণ করতে হবে যা নিম্নরুপঃ

ধারা ৯: অভিযোগ গ্রহণকারী কমিটিঃ

ক) অভিযোগ গ্রহণের জন্য, তদন্ত পরিচালনার জন্য এবং সুপারিশ করার জন্য সরকারী বেসরকারী সকল কর্মক্ষেত্রে এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গ্রহণের জন্য কমিটি গঠন করবে।

খ) কমপক্ষে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হবে যার বেশীর ভাগ সদস্য হবেন নারী। সম্ভব হলে কমিটির প্রধান হবেন নারী।

গ) কমিটির দুইজন সদস্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে নিতে হবে, যে প্রতিষ্ঠান জেন্ডার এবং যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে কাজ করে।

ঘ) অভিযোগ কমিটি সরকারের কাছে এ নীতিমালা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বাৎসরিক অভিযোগ প্রতিবেদন পেশ করবে।

ধারা ১০: অভিযোগ কমিটির পরিচালনা প্রণালীঃ

সাধারণভাবে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ কমিটির কাছে অভিযোগ পেশ করতে হবে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণের জন্য কমিটি যা করবে তা হলো:

ক) লঘু হয়রানির ক্ষেত্রে যদি সম্ভব হয়, অভিযোগ কমিটি সংশ্লিষ্ট উভয় পক্ষের সম্মতি নিয়ে অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিবে এবং এ বিষয়ে সরকারী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে।

খ) অন্য সকল ক্ষেত্রে অভিযোগ কমিটি বিষয়টি তদন্ত করবে।

গ) অভিযোগ কমিটি ডাকের মাধ্যমে রেজিস্ট্রিকৃত নোটিশ উভয় পক্ষকে এবং সাক্ষীদের প্রেরণ করা, শুনানি পরিচালনা, তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ এবং সকল সংশ্লিষ্ট দলিল পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা রাখবে।

এ ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে মৌখিক প্রমাণ ছাড়াও পরিস্থিতিগত প্রমাণের উপর গুরুত্ব দেয়া হবে। এ অভিযোগ কমিটির কার্যক্রম নিশ্চিত করতে সরকারী এবং বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ট অফিস সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদানে বাধ্য থাকবে। অভিযোগ কমিটি অভিযোগকারীদের পরিচয় গোপন রাখবে। অভিযোগকারীর সাক্ষ্য গ্রহণের সময় এমন কোন প্রশ্ন বা আচরণ করা যাবে না যা উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপমানজনক এবং হয়রানিমূলক হয়।

সাক্ষ্যগ্রহণের সময় যথাসম্ভব গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে। অভিযোগকারী যদি অভিযোগ তুলে নিতে চায় বা তদন্ত বন্ধের দাবি জানায় তাহলে এর কারণ তদন্ত করে প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে হবে। অভিযোগ কমিটি ৩০ দিনের মধ্যে তাদের সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রদান করবে। প্রয়োজনে এ সময়সীমা ৩০ কার্যদিবস থেকে ৬০ কার্যদিবসে বাড়ানো যাবে। যদি এটা প্রমাণিত হয় যে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের জন্য সুপারিশ করা হবে। অভিযোগ কমিটির বেশিরভাগ সদস্য যে রায় দিবে তার উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

ধারা ১১: শাস্তিঃ

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে (ছাত্র ব্যতিরেকে) সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারেন এবং ছাত্রদের ক্ষেত্রে, অভিযোগ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তাদেরকে শ্রেণীকক্ষে আসা থেকে বিরত রাখতে পারেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করবে এবং সকল সরকারী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রের শৃঙ্খলা বিধি অনুসারে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং যদি উক্ত অভিযোগ দন্ডবিধির যেকোন ধারা অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে পণ্য হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ফৌজদারী আইনের আশ্রয় নিতে হবে যা পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট আদালতে বিচার হবে।

প্রকাশের তারিখ
14/05/2009
আর্কাইভ তারিখ
31/12/2041

পত্র যোগাযোগের ঠিকানা

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর

উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়

পান্থ প্রভা (৩য় তলা), বি-২৪/১০, আটপুকুরপাড়, বিশ্বাস বেতকা, ঢাকা রোড, টাঙ্গাইল সদর, টাঙ্গাইল-১৯০০। 

ই-মেইল: digfe.tangail@gmail.com

ফোন: ০২৯৯-৭৭৫৩৩১৮